, রবিবার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪ , ১৪ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ


কন্যা সন্তানের মা হলো চতুর্থ শ্রেণির সেই স্কুলছাত্রী

  • আপলোড সময় : ০২-০৯-২০২৩ ০৭:১৩:০৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ০২-০৯-২০২৩ ০৭:১৩:০৩ অপরাহ্ন
কন্যা সন্তানের মা হলো চতুর্থ শ্রেণির সেই স্কুলছাত্রী
এবার নাটোরের গুরুদাসপুরে ধর্ষণে অন্তঃসত্ত্বা সেই চতুর্থ শ্রেণির স্কুলছাত্রী অবশেষে কন্যা সন্তানের মা হয়েছেন। আজ শনিবার ২ সেপ্টেম্বর দুপুরে গুরুদাসপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে সিজারের মাধ্যমে ওই স্কুলছাত্রীর কোল আলো করে জন্ম নেয় ফুটফুটে কন্যা সন্তান। শিশুটিকে এক নজর দেখতে উৎসুক জনতার ভিড় জমেছে হাসপাতালে। 

এদিকে গুরুদাসপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের গাইনি বিশেষজ্ঞ ডাক্তার নারগিস তানজিমা ফেরদৌস ও পঃপঃ কর্মকর্তা ড. মোজাহিদুল ইসলাম জানান, ‘স্কুলছাত্রীটি ছোট থাকায় মা ও নবজাতকের স্বাস্থ্য রক্ষা নিয়ে আমরা টেনশনে ছিলাম। অবশেষে সফল অস্ত্রোপচার হয়েছে। মা ও নবজাতক সুস্থ রয়েছে।’

ওই স্কুলছাত্রীর দাদি জানান, ‘আমি গরিব মানুষ, অন্যের বাড়িতে কাজ করে অনেক কষ্টে সংসার চালাই। আমাদের কষ্টের কথা ভেবে প্রয়াত স্থানীয় সংসদ সদস্য অধ্যাপক আব্দুল কুদ্দুস ১৫ দিন আগে ২০ হাজার টাকা দিয়েছিলেন। এগুলো দিয়েই ওর সেবা করেছি। এখন অনেক চিন্তায় আমাকে আঁকড়ে ধরেছে। কি করবো ভেবে পাচ্ছি না। এই শিশুকে যদি কেউ দত্তক নিতো তাহলে কিছুটা হলেও স্বস্তি পেতাম।’

এদিকে পারিবারিক কলহের কারণে শিশুটির বাবা-মার সংসার ভেঙে যায়। পরবর্তীতে বাবা ও মা অন্যত্র বিয়ে করে। এরপর থেকে শিশুটি তার নানির কাছে থাকতো। এলাকার এক দুঃসম্পর্কের নানা জাহিদুল খাঁ মাঝে মধ্য শিশুটিকে নিয়ে তার ভ্যানে করে স্কুলে আনা নেয়া করতো। এক পর্যায়ে শিশুটির শারীরিক পরিবর্তন দেখে পরিবারের সদস্যরা জিজ্ঞেস করলে কোনো উত্তর দেয়নি শিশুটি। 

তবে পরীক্ষা-নিরীক্ষায় গর্ভে সন্তান থাকার কথা জানতে পারে পরিবার। পরবর্তীতে স্থানীয় একটি ক্লিনিকে নিয়ে আল্ট্রাসনোগ্রাফি করার মাধ্যমে চিকিৎসক অন্তঃসত্ত্বার বিষয়টি নিশ্চিত করেন। পরে শিশুটি এ ঘটনা তার পরিবারকে খুলে বলে। গত ১৮ জুন শিশুটির দাদি হালিমা খাতুন বাদী হয়ে গুরুদাসপুর থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।

এদিকে দীর্ঘ সময় পর র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-৫) গত ২৬ আগস্ট সকালে ফরিদপুর জেলার আলফাডাঙ্গা থানার হেলেঞ্চা এলাকা থেকে জাহিদুল খাঁকে (৫০) গ্রেপ্তার করে। গ্রেপ্তার জাহিদুল খাঁ গুরুদাসপুর উপজেলার ধারাবারিষা ইউনিয়নের দক্ষিণ নাড়িবাড়ি গ্রামের মৃত কালু খাঁর ছেলে। বর্তমানে জাহিদুল কারাগারে রয়েছেন
 
ওই শিশুটি জানায়, অনেক আগে থেকেই তাকে আদর করতেন নানা জাহিদুল ইসলাম। বিভিন্ন সময়ে খাবার জিনিস কিনে দিতেন। প্রায়ই তার ভ্যানযোগে তাকে স্কুলে আনা-নেয়া করতেন। ঘটনার দিন স্কুলে যাওয়ার জন্য গোসল করে বাড়ির ভেতর কাপড় পরিবর্তন করছিল শিশুটি। বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে জাহিদুল ইসলাম শিশুটিকে ধর্ষণ করে। বিষয়টি কাউকে জানালে শিশুটিকে মেরে ফেলার হুমকি দেন তিনি। ফলে ওই ঘটনা কাউকে বলতে সাহস পায়নি শিশুটি।